সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০১৬

জাহিদ মিল্টন



কলাবাগান মানে এক একটা ব্যর্থ গল্প। এই রকম আরো আছে। যা ভুলে যাচ্ছি তা হল, আমি দেখেও বলি না রোজ সন্ধায় একদল মানুষ রাধা-কৃ্ষ্ণের বন্দনা করে। মন্দিরের ঘন্টাটা আজও মিসিং। ঘড়িটাও তার ভাল না। মাছেরা গায় গান, নট ভিজুয়াল। তাল ধরে নেয় গলে গলে যাও না কেন বেদনা মোর! গলে যাও, তুমিও ভোর। একটা একটা করে মোট ৫টা মৃতদেহের ভার ঘাসের কাঁধে। আমার কান্না পায় খুব। আমিও ভাবি ঘাস হয়ে যাই। হাসিও পায় খুব। ঘাসেদের হাসি কেমন হবে?

আমাদের মদ খাওয়ার চাহিদা তেলাপোকার মত নিবিঢ়। আজ সুমনার গায়ে হলুদ। হলুদ রং'র সাথে আমার ঘুমুতে খুব ভয় হয়। এদের সাথে শেষবার দেখা হয়েছিলো লাশকাটা সজ্জিত টেবিলে। আমাদের মনোযোগ ছিলো পরস্পরের দিকে খুব। আমাদের সুযোগ হয়েছিলো মুখ ফসকে কতদূর যাইবো তার অশ্লীল বিবরণকে টকটকে লাল কিংবা সবুজ পর্দা দিয়ে ঢাকতে। একদিন দুপুরেই জারুল ফুল গুলো ঝড়ে পড়ে গেল। একদিন বরফকে দেখেছিলাম গলে যেতে একেবারে। স্বপ্ন ছিল, রাত ছিল, পাখির বাসা ছিল, বাসায় তুতুতা ঘুমুচ্ছে। আমাকে মনে হয় আজ প্রচুর মদের সন্ধানে যাইতে হবে। পিঠের ওপর পাহাড়। তা কেন আস্তে গলবে না।

ছুটির দিনে রোদের আকাশ মূলত একটি ছাতা। ছাতার তলেই আমার হাঁটা। এই যে রোদে হেলান দেয়া দু মুঠো বাড়ি গুলো দাঁড়িয়ে। পলাশ পাড়ে আগে এরা অঙ্ক শিখতো। তখনই তাদের কাঁদতে দেখেছি প্রথম। এরা আজ মুক্ত। ওপেন লাইব্রেরী। একটা জারুলতম রোদ আয় না ফের। বস্তুত পক্ষে আমার দেখার আছে অনেক। আমি এইরম সকাল চাই-এইরম দুপুরও চাই- চাই বহুমুখী বইয়া যাওয়া গন্ধ বাগানের সন্ধ্যা। খুব একলা চাই। হাঙর দেখেছো জারুল? দেখা হলে আমি চা’ও খাওয়াই।

পরস্পর পরস্পরের টানা বৃত্তের বাইরে। বৃত্তের বাইরে ভোরবেলাও। আমার বুক ফুটো হয়ে গেছে। মাঝপথ ভিজিয়ে এখন পা অব্দি লাল। গন্তব্য সমানসমান, শুন্য। আমরা রাতের পথ হাঁটলাম। হাওয়ার সাথে শিশু পলিথিনের খেলা। আমরাও খেলায় অংশ নেই। কিন্তু আমরা কে? হাওয়া কি ঐ পলকা সাদা পাখা ওয়ালা জড়ো বস্তুর বন্ধু? নাকি পিতা? কিন্তু রাত ঐদিকে পলাতক, আমাদের দিকে মনযোগ; ইদানিং সেচ্ছায় দিচ্ছে না কোন ফেরীওয়ালা। শহরের এক বিরিয়ানী ঘরে রেলগাড়ি চলছে সেই। আর একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্বলছিল আসমানী আলো।

আজকে আমাদের দুইটি ফুল। রাত বিছিয়ে খড়ের উঠোন। আসমানে লেগে গেছে সাতকথা। বৈশাখলগ্ন দেখি নদী বয়ে যায়। তুমি জবা, তুমি রজনীগন্ধা। দেখো এই দুইপাড়ে জেগেছে গান। দেখো একমুখ বাঁশীওয়ালার দাড়ি। দেহ থেকে খসে খসে পড়ছে তারকা গাড়ি। অথচ প্রত্যেক রাতে নষ্ট হয়ে যাবো ভাবি। রাতকে করি ফালি ফালি। বাণিজ্যের ফ্লোরিংয়ে এখনো দু-তিনদিন বেঁচে থাকি। ট্রেসিংপেপারে ইচ্ছে মতন মন আর মনহীনের কেমন এক যৌগিক মিল, দেখি। তবুও পৃথিবীতে দেখি নি কোথাও একটি মনের প্রমাণ।

মহাকাশের দিকে যে মেয়েটি
হাঁ করে তাকিয়ে আছে
তার পক্ষে উড়াল সম্ভব।
এই ধরনের আকুতির সংগ্রামে
আমিও প্রস্তুত প্রভু,
কিশোর কেবলই ভাসতে পারে
যেদিকে ঢেউ যায়
মেঘলা বনে,
এমন কিশোর কি উড়তে পারবে কভু?
সাঁতারে ভাল না
আষাঢ়ে বৃষ্টি কই?
আমার তাই মহাকাশই ভাল
পছন্দের ফুল
ডানাতে বিদুৎ
ঝর্ণার দর্শণে মালগাড়ী গিয়ে থামবে
মহাস্টেশন রোড। নতুন পোশাক পড়ে জ্বলে ওঠবে পুরাতন ডাকঘর, রাগী রোববার।


মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ, কার্তুজ'এর সঙ্গেই থাকুন।